ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ৭টি খাদ্য টিপস

ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য পরামর্শ 

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য পরামর্শ মেনে চললে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এই ব্লগে আমরা জানবো কিভাবে ডায়াবেটিসের রোগীরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কিছু সাধারন পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন। 

pic

 

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার বেছে নিন 

ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য পরামর্শের মধ্যে অন্যতম হলো জিআই স্কোর কম এমন খাবার খাওয়া। ওটস, ব্রাউন রাইস, মসুর ডাল, শাকসবজি এগুলোর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এগুলো রক্তের শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ায়। এই ধরনের খাদ্য নির্বাচন রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার টিপস হিসেবে কাজ কার্যকর। 

পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন 

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য টিপস মানে শুধু মিষ্টি বাদ দেওয়া নয় বরং বেশি করে আঁশ খাওয়া দরকার। আশ জাতীয় খাবার যেমন-সবুজ শাক, গাজর, মটরশুটি ইত্যাদি হজম ধীরে করে এবং ইনসুলিনের রেস্পন্স নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করুন 

একটি কার্যকর ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য পরিকল্পনা হলো প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী খাওয়া। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা বা হঠাৎ বেশি খাওয়া রক্তে শর্করার ভারসাম্য নষ্ট করে। তাই নির্দিষ্ট বিরতিতে ছোট ছোট মিল গ্রহণ ডায়াবেটিস রোগীদের সুষম খাদ্যাভ্যাসের টিপস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। 

প্রোটিন যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন 

প্রোটিন শরীরে শক্তি যোগায় ও রক্তের চিনি বাড়ায় না। ডিমের সাদা অংশ, ছোলা, মুগ ডাল, গ্রিলড মাছ ইত্যাদি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান হিসেবে চমৎকার। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন রাখা ডায়াবেটিস ম্যানেজমেন্ট টিপস এর মধ্যে অন্যতম। 

অতিরিক্ত চিনি ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন 

প্রসেসড ও রিফাইন্ড ফুডস যেমন- সফট ড্রিংস, পেস্ট্রি, চকলেট ইত্যাদি রক্তে দ্রুত চিনি বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য নির্বাচনে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই জরুরী। এই ধরনের খাবার বর্জন করাই হলো অন্যতম ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের খাদ্য পরামর্শ।


 

 

স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করুন 

চর্বি মানেই খারাপ নয়। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপযুক্ত চর্বির উৎস বেছে নেওয়াটাই মূল কথা। অলিভ অয়েল, বাদাম, এভোকাডো ইত্যাদি ডায়াবেটিস ফ্রেণ্ডলি খাদ্য উপাদান হিসেবে ধরা হয়। এই খাবারগুলো হৃদযন্ত্রও ভালো রাখে। 

পর্যাপ্ত পানি পান করুন 

শরীর হাইড্রেটেড রাখা রক্তের শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য টিপস তালিকায় পানি পানের পরামর্শ অপরিহার্য। দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করলে রক্তে গ্লুকোজের ঘনত্ব কমে এবং রেনাল সমস্যা হ্রাস পায়। 

ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকা পরিকল্পনার উদাহরণ 

  • সকালে ওটমিল ও সিদ্ধ ডিম,
  •  
  • দুপুরে ব্রাউন রাইস ও সবজি,
  •  
  • বিকেলে ছোলা ভুনা,
  •  
  • রাতে হালকা ডাল ও সবজি।

 

এই রুটিন অনুযায়ী চললে আপনি সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সহায়ক খাদ্য তালিকা তৈরি করতে পারবেন। এমন পরিকল্পনা আপনার সুগার লেভেল স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। 

খাদ্য রেকর্ড ও মনিটরিং 

প্রতিদিন আপনি কি খাচ্ছেন তা লিখে রাখলে ও গ্লুকোজ লেভেল মেপে ফেললে বুঝতে পারবেন কোন খাবার আপনার জন্য উপযোগী। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্যাভ্যাস সংক্রান্ত সচেতনতা গড়ে তুলতেই এটি কার্যকর। এমন টিপস নিয়মিত মেনে চলাই আপনার সুস্থ থাকার চাবিকাঠি। 

স্বাস্থ্যকর খাদ্যই ডায়াবেটিসের রক্ষাকবচ 

সঠিক ও নিয়মিত খাদ্যাভাসেই ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অস্ত্র। উপরোক্ত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাতটি খাদ্য নির্দেশনা বা এই ধরনের রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে খাদ্য পরামর্শ মেনে চললে দীর্ঘ মেয়াদে ইনসুলিন সাপোর্টের প্রয়োজন কমে আসবে এবং জীবন হবে আরও সুস্থ ও স্বাভাবিক। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url